রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কড়া সমালোচক ও বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর জন্য রাশিয়াকে দায়ী করছেন পশ্চিমা নেতারা।
এ ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, নাভালনির মৃত্যুর জন্য পুতিনকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। তারা এর আগে জানিয়েছিল, কারাগারে নাভালনির চিকিৎসা ও বসবাসের কোনো সমস্যা নেই। তবে কিভাবে তিনি মারা গেলেন।
নাভালনির মৃত্যুর বিষয়ে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও পুতিনের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, নাভালনির মৃত্যু হলো পুতিনের নিষ্ঠুরতার আরেকটি লক্ষণ।
জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, রাশিয়া এর জন্য দায়ী।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, নাভালনিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হত্যা করেছেন।
জেলেনস্কি বলেন, নির্যাতনের শিকার হাজার হাজার মানুষের মতো নাভালনিও পুতিনের হাতে নিহত হয়েছেন। এর জন্য পুতিনকে জবাবদিহি করতে হবে।
নাভালনি রাশিয়ার আর্কটিক অঞ্চল খর্পের বন্দিশিবির আইকে-৩ এ ৩০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। এই বন্দি শিবিরটি ‘পোলার উলফ’ নামেও পরিচিত।
শুক্রবার শিবিরের মধ্যে হাঁটহাঁটি করে ফেরার পর নাভালনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান আর কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয় বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
খর্প রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে ১৯০০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বের একটি শহর।
রাশিয়ার ইয়েমালে-নিনিয়েৎস স্বায়ত্তশাসিত জেলার ফেডারেল কারাগার পরিষেবা এক বিবৃতিতে বলেছে, হাঁটাহাঁটি শেষ করে ফেরার পর তিনি অসুস্থবোধ করেন আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অজ্ঞান হয়ে যান, তার জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করা হলেও তা আর ফেরেনি।
সাবেক আইনজীবী নাভালনি (৪৭) রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। এক দশকেরও বেশি সময় আগে প্রকাশ্যে রাশিয়ার প্রবল প্রতাপশালী নেতা পুতিনের বিরোধিতা ও সমালোচনা করে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিলেন। এভাবেই একসময় রাশিয়ার প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
এদিকে জার্মানির মিউনিখে এক নিরাপত্তা সম্মেলনে নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া বলেছেন, তার স্বামী মারা গেছেন কি না, তা নিশ্চিত হতে পারেননি তিনি, কারণ ‘পুতিন ও তার সরকার অবিরাম মিথ্যা বলে’।
স্বামীকে জেলে রেখে তার অপেক্ষায় বছরের পর বছর অপেক্ষায় ছিলেন ইউলিয়া। শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যুর সময় কাছে থাকতে পারেননি। এ যন্ত্রণায় হৃদয় দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে ইউলিয়ার।
ইউলিয়া বলেছেন, শাস্তি এড়াতে পারবেন না পুতিন। তাকে শাস্তি ছাড়া ছেড়ে দেয়া যাবে না। এ সময় অঝোরে কাঁদেন এই নারী।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, নাভালনির মৃত্যুর কথা পুতিনকে জানানো হয়েছে। তবে এ নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, নাভালনির মৃত্যু নিয়ে পশ্চিমা নেতারা যে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন তা ‘অগ্রহণযোগ্য ও পুরোপুরি উন্মাদদের মতো’।