২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০১:৪৭:৩৭ পূর্বাহ্ন
ভোটার উপস্থিতি নিয়ে কুষ্টিয়া আ. লীগে অসন্তোষ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৫-২০২৪
ভোটার উপস্থিতি নিয়ে কুষ্টিয়া আ. লীগে অসন্তোষ

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। কিন্তু এই জয় নিয়ে সন্তুষ্ট নন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। তাঁরা ভোটারদের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।


আতাউর দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই। তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জনতা ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আবু আহাদ আল মামুনের চেয়ে প্রায় ৬৪ হাজার ভোট বেশি পেয়েছেন। সদর উপজেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ৪ লাখ ২০ হাজার ৮৩৩ জন। সেখানে গত বুধবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৭৩ হাজার ২৯৯টি।


অর্থাৎ ১৭ দশমিক ৪২ শতাংশ ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। নির্বাচনে এত কমসংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। কয়েকজন স্থানীয় নেতা-কর্মীর সঙ্গে আলাপকালে তাঁরা ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার জন্য নেতাদের অতি আত্মবিশ্বাসকে দায়ী করছেন। এ ছাড়া জেতার জন্য প্রার্থীদের অনাকাঙ্ক্ষিত নানা তৎপরতাও সমান দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন।


আওয়ামী লীগের প্রবীণ এক নেতা ভোটের হিসাব কষে আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছিলেন আতাউর। এই একটি উপজেলা নিয়েই কুষ্টিয়া-৩ আসন। এখানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল প্রায় ৪২ শতাংশ। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের হওয়ায় ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৪০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল।


ধরে নেওয়া যায়, এই উপজেলায় আওয়ামী লীগের রিজার্ভ ভোট ৪০ থেকে ৪২ শতাংশ। কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট পড়েছে মাত্র সাড়ে ১৭ শতাংশ। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের কর্মী ও সমর্থকেরাও ভোটবিমুখ হয়েছেন। এটা দলের জন্য বড় দুঃসংবাদ। কর্মীদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট না দেওয়ার অনীহা দলকে ভবিষ্যতে সংকটে ফেলতে পারে।


এ নিয়ে কথা হলে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুষ্টিয়ার সাবেক সহসভাপতি মিজানুর রহমান লাকী বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব হলো তার প্রতি আস্থাশীল ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু নিজের লোকদেরও প্রার্থীরা ভোটকেন্দ্রে নিতে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিই লাভবান হবে।


যোগাযোগ করা হলে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার ইকবাল মাহমুদ মনে করেন, ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ভোটাররা বিমুখ হয়েছেন। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের ভেতরে থাকা অনুপ্রবেশকারীরাও এর জন্য কিছুটা দায়ী। কুষ্টিয়ায় এখন সর্বত্র আওয়ামী লীগের জয়জয়কার। অথচ কর্মী-সমর্থকেরাও ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিচ্ছেন না।


এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করতে পারে নাই। সাংগঠনিকভাবে তদারক করতে পারলে এই সংকট নিরসন হয়ে যাবে।’


শেয়ার করুন