১৬ মে ২০২৫, শুক্রবার, ০৬:২৪:৫৩ অপরাহ্ন
কাতারের বিলাস বহুল বিমান ‘উপহার’, বিপাকে পড়ছেন ট্রাম্প?
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৫-২০২৫
কাতারের বিলাস বহুল বিমান ‘উপহার’, বিপাকে পড়ছেন ট্রাম্প?

কাতারের দেওয়া ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিমান গ্রহণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।  যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র রাজনৈতিক বিভাজনের মধ্যেও এ বিষয়ে নিজের পক্ষে অনেককে যুক্ত করতে পেরেছেন তিনি যেটাকে তার জন্য বড় অর্জন হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তবে, হোয়াইট হাউজের জন্য অস্বস্তির বিষয় হলো, বিপক্ষেও বড় ঐক্য তৈরি হয়েছে।  খবর বিবিসি বাংলার। 


কাতারের রাজপরিবারের কাছ থেকে বিলাসবহুল বিমান নেয়ার ইঙ্গিত দেওয়ার পর ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকেই ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন। এমনকি চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার আগেই এ নিয়ে সমালোচনা করছেন তার অনেক কট্টর সমর্থকও।



বড় মাপের ইনফ্লুয়েন্সাররাও এই পদক্ষেপকে ‘ঘুস’, দুর্নীতি কিংবা উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতির উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করছেন, যেখানে অতীতে ট্রাম্প নিজেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছেন বহুবার।


কাতারের রাজপরিবার ৪০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বিলাসবহুল বিমান, বোয়িং ৭৪৭-৮ মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগকে দেয়ার পরিকল্পনা করেছে, যা প্রেসিডেন্টের বিমান ভ্রমণের আনুষ্ঠানিক মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান' বহরের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।


হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, নতুন বিমানটি- সংস্কার ও আপগ্রেড করতে বছরের পর বছর সময় লাগতে পারে এবং লাখ লাখ ডলার খরচ হতে পারে। তাই ট্র্রাম্পের মেয়াদ শেষে তা প্রেসিডেন্টের সংরক্ষণাগারে স্থানান্তর করা হবে।


রোববার খবরটি সামনে আসতেই এ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেওয়া যায়।


রক্ষণশীল ডেইলি ওয়্যারের বক্তা বেন সাপিরো তার পডকাস্টে বলেন, আমি মনে করি, বিষয়টি 'ন্যক্কারজনক'। কাতার কেবল নিজেদের মনের খুশির জন্যই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিমানটি দিচ্ছে না, দ্বিপাক্ষিক উপায়ে নিজেদের পকেটে অর্থ ঢোকানোর চেষ্টাও রয়েছে তাদের।


তিনি এবং অন্য অনেকে, কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পেছনে অর্থ ঢালার পুরানো অভিযোগ তুলে ধরেন এবং কাতারিদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদের বৃহৎ সমর্থক বলেও অভিহিত করেছেন, যেসব অভিযোগ দেশটি অস্বীকার করে আসছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় ষড়যন্ত্র তত্ত্বের প্রভাবশালী আলোচক লরা লুমার, যিনি কিনা হোয়াইট হাউজের অপেক্ষাকৃত কম অনুগত শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্তের দাবিতে আন্দোলন করছেন, তিনিও এই পদক্ষেপের সমালোচনা করার জন্য ট্রাম্পপন্থি বার্তাগুলোর উন্মুক্ত প্রবাহকে দায়ী করেছেন।


প্রেসিডেন্টকে এখনো সমর্থন করার কথা বললেও বিমান চুক্তিকে তিনি 'একটি দাগ' হিসেবেই উল্লেখ করছেন। তিনি সশস্ত্র ইসলামপন্থি জঙ্গিদের দ্বারা পূর্ণ একটি বিমানের কার্টুন পোস্ট করেছেন যেটিকে 'ট্রোজান হর্স' বলে বোঝানো হচ্ছে।


বিমান উপহার নেওয়ার পরিকল্পনার জন্য মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছ থেকেও খুব কম সমর্থন পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।


নিউইয়র্ক পোস্ট, যাদেরকে আড়ালে ট্রাম্পের সমর্থক হিসেবে বিবেচনা করেন অনেকে, তারাও স্পষ্ট সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে যেখানে বলা হয়েছে, কাতারের জেট 'বিনামূল্যের উপহার' নয় - এবং ট্রাম্পেরও উচিত হবে না এটিকে উপহার হিসেবে গ্রহণ করা।


এছাড়া, ফক্স নিউজ এবং নিজের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্টের ধারাবাহিক প্রশংসাকারী হিসেব পরিচিত মার্ক লেভিন- এক্স এ দেয়া এক বার্তায় কাতারকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন।


তিনি লেখেন, ‘বিমান ও অন্যান্য জিনিস যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনার মাধ্যমে যে সমর্থন তারা খুঁজছে, তা তারা পাবে না।’


নিজের প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প নিজেই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলিকে অর্থায়নের জন্য কাতারকে অভিযুক্ত করেছিলেন।


ওয়াশিংটনের কাতার দূতাবাসে বিবিসি যোগাযোগ করলে, বিমান সম্পর্কে সিএনএনকে দেওয়া কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল-থানির একটি সাক্ষাৎকারের দিকে ইঙ্গিত করা হয়।


শেয়ার করুন