দেশে জ্বালানি তেলের (ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন, পেট্রোল) দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাশ মশাল হাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনে করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
শনিবার (৬ আগস্ট) রাতে সরকার কর্তৃক সকল ধরণের জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাত দেড়টায় এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মিছিলে বিক্ষোভকারীরা তেলে দাম কমানোর দাবিতে স্লোগান দেন। মশাল হাতে মিছিলটি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসি এলাকা হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রদক্ষিণ করে।
এসময় তারা ‘দাম বাড়ালে জ্বালানি, জনগণ দেবে কেলানি’, ‘দাম বাড়ানো সরকার, আর নাই দরকার’, ‘গরিব মারা সরকার, আর নাই দরকার’, ‘জ্বালানির দাম কমায় দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’, ‘স্বৈরাচারের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
ছাত্র অধিকার পরিষদের মশাল মিছিলে পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি তারিকুল ইসলাম, ঢাবি শাখার সভাপতি আখতার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন, সিনিয়র সহ সভাপতি আসিফ মাহমুদ, সাহিত্য সম্পাদক জাহিদ আহসানসহ বিভিন্ন শাখার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সরকারের জ্বালানি তেল তথা ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন, পেট্রোলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টায় এ বিক্ষোভ মিছিল করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। আন্দোলনকারীরা। তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঢাবি রাজু ভাস্কর্যে তাৎক্ষণিক মশাল মিছিল করেন তারা।
নতুন দাম অনুযায়ী— প্রতি লিটার ডিজেল ৮০ টাকা থেকে ৩৪ টাকা বেড়ে ১১৪ টাকা, কেরোসিন ৩৪ টাকা বেড়ে ১১৪ টাকা, অকটেন ৪৬ টাকা বেড়ে ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোল ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাত ১০টায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয়। সেই সময় এই দুই জ্বালানির দাম লিটারপ্রতি ৬৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়। ৮ মাসের ব্যবধানে আবার বাড়ানো হলো তেলের দাম। তবে ওই সময় পেট্রোল আর অকটেনের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছিল। এবার সব ধরনের জ্বালানি তেলেরই দাম বাড়ানো হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি), ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল)-এ পরিশোধিত এবং আমদানি/ক্রয়কৃত ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রলের মূল্য সমন্বয় করে ভোক্তা পর্যায়ে এই দাম পুনঃনির্ধারণ করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের উর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করা হয়। ভারত গত ২২ মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি এবং পেট্রল ১০৬ দশমিক ০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে।এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় যথাক্রমে ১১৪ দশমিক ০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা (১ রুপি=১.২৩ টাকা ধরে)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪ দশমিক ০৯ এবং পেট্রল লিটার প্রতি ৪৪ দশমিক ৪২ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছিল। তাই সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানো ছিল সময়ের দাবি।’
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় সরকার। রাত ১২টার পর থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর করা হয়েছে।ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রোলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। অকটেন বিক্রি করা হচ্ছে ১৩৫ টাকা করে যা আগের তুলনায় ৪৬ টাকা বেশি।