ওপরে পুরু সর, নিচে হালকা উষ্ণ সাদা দুধ। আহা! দেখলেই মন ভরে যায়, খেলে তো কথাই নেই। দুধ বললেই মনে পড়ে সুষম খাদ্যের কথা। স্কুল জীবনে ডিম–দুধ–কলার কথা শোনেনি এমন কেউ কি আছে?
সে যাক, এবার একটু থামি। গরু, মহিষ বা ছাগলের দুধ খেলে সবাই ‘সুস্বাস্থ্য’ লাভ করবে, এতটা কি জোর দিয়ে বলা যায়? তাহলে ওই যে কারও কারও অ্যালার্জি হচ্ছে, কারও গ্যাস তো কারও বদহজম হচ্ছে কেন! এসব দেখে বলাই যায়, সবক্ষেত্রে দুধটা ‘সুষম’ খাদ্যের শর্ত পূরণ করে না।
আরও আছে। এই যে আমরা যেন ভেবেই নিয়েছি, প্রাণীকুলের সৃষ্টিই হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য। হয় তাদের মাংস খাওয়া হবে, নয়তো দুধ। কিন্তু প্রাণীজ মাংস খাওয়া বা দুধ পান করার কারণে প্রাকৃতিক ভারসাম্যও যে নষ্ট হচ্ছে, সে কথাও তো ধীরে ধীরে জানতে পারছে মানুষ।
কীভাবে সেটা ঘটছে তা নিয়ে গবেষণাও হচ্ছে বিস্তর। এখানে অত গভীরে না গিয়ে আমরা বরং বলতে পারি, প্রাণীর কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া দুধের বদলে আমরা যদি উদ্ভিদের কাছে গিয়ে বলি, তোমরা কি আমাদের সাহায্য করতে পার না? উদ্ভিদের কাছে এ প্রশ্নের উত্তর তৈরিই আছে। উদ্ভিজ্জ দুধ খেলে গ্যাস হবে না, বদহজম হবে না, হবে না অ্যালার্জি। আর তা একেবারেই পরিবেশবান্ধব।
বিশ্বের টেকসই উন্নয়ের পথে হাঁটতে গিয়ে পরিবেশবাদীরা কত কী–ই না করছেন। প্রাকৃতিক সম্পদের পর্যাপ্ত ব্যবহার থেকে শুরু করে পণ্যের পুনর্ব্যবহার করার কথা তো থাকছেই; পাশাপাশি সবুজবান্ধব জীবনযাপনে খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনার পক্ষে কাজ করছেন অনেকেই।
পরিবেশবান্ধব খাদ্যতালিকায় প্রাণিজ উৎসের পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ উপাদানগুলোকে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে পরিবেশবাদীরা। মানে, খাদ্যতালিকা থেকে প্রাণিজ প্রোটিনকে একপ্রকার ছাঁটাই করে যদি উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎসকে খুঁজে নেওয়া যায়, তবেই মঙ্গল। আর সে ভাবনাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে ২০১৭ সাল থেকে আগস্টের ২২ তারিখ পালিত হয়ে আসছে ‘বিশ্ব উদ্ভিজ্জ দুগ্ধ দিবস’। এই দিবস প্রতিষ্ঠার অন্যতম লক্ষ্য ছিল প্রাণিজ খাবারের পরিবর্তে উদ্ভিজ্জ খাবারকে বেছে নেওয়ায় জন্য মানুষকে উৎসাহী করে তোলা।
দুধের উদ্ভিজ্জ উৎস
কোথায় পাওয়া যাবে এই দুধ? উৎস থাকতে পারে অনেক। তবে সে বিষয়ে কথা বলার আগে জরুরি কথা হলো, দুধের ঘনত্ব ও ঘ্রাণ কেমন হবে তা নির্ভর করে উৎসের ওপর। এবার চেনাজানা কয়েকটি উৎসের কথা বলি। এই যেমন আমন্ড, ওটমিল ও সয়া হয়ে উঠতে পারে সহজলভ্য উদ্ভিজ্জ দুধের উৎস।