ওমর সানী-জায়েদ খান ইস্যুতে উত্তাল ঢালিউড। অভিযোগ উঠেছে— চিত্রনায়ক ওমর সানীকে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলির হুমকি দিয়েছেন আরেক নায়ক জায়েদ খান। তার আগে জায়েদকে সবার সামনে কষে চড় মারেন সানী।
শুক্রবার রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে অভিনেতা ডিপজলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার বর্ণনা দেন ওমর সানী, ‘আমি গিয়েই চড় মেরেছি। সে আমাকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দিয়েছে। তখন আমি একটি গালি দিয়েছি তাকে (সরি ফর মাই ল্যাঙ্গুয়েজ)। এ সময় রোজিনা আপা, অঞ্জনা আপা, সুচরিতা আপা উনারা উপস্থিত ছিলেন।’
তবে চড় খাওয়া ও পিস্তল বের করে গুলি করার হুমকির কোনো ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি জায়েদ খানের।
বিষয়টি নিয়ে যখন বিতর্ক চলছে, তখন এক প্রত্যক্ষদর্শী জানালেন, ‘গুলি করে দেব’ কথাটি তিনি নিজ কানে শুনেছেন।
সেই প্রত্যক্ষদর্শী একজন অভিনয়শিল্পী। তার নাম যাদু আজাদ। তিনি জানালেন, ঘটনার সময় একটু দূরে ছিলেন তিনি।
যাদু আজাদ বলেন, ‘ডিপজল ভাইয়ের ছেলের বিয়েতে স্ত্রীসহ গিয়েছিলাম আমি। সেদিন আমি খাওয়াদাওয়া শেষ করে উপহার জমা দিয়ে পান খাচ্ছিলাম। আর আমার স্ত্রীসহ কয়েকজন মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম। তখনই হইচই শুনি। দৌড়ে গেলাম। এতটুকু কানে এলো, জায়েদ খান ওমর সানীকে বলছেন— গুলি করে দেব।’
ওমর সানীর অভিযোগ জায়েদ খান পিস্তল বের করেছিলেন। পিস্তল দেখেছেন কি?
জবাবে যাদু আজাদ বলেন, ‘আমি তো দূরে ছিলাম। তবে দূর থেকে মনে হচ্ছিল পকেটে হাত দিয়ে পিস্তল বের করছেন জায়েদ। যখন কাছে পৌঁছালাম ততক্ষণে ঝামেলা থেমে গেছে। এর আগেই যা হওয়ার হয়ে গেছে। আমি ঘটনার বিষয়ে জানতে ওমর সানীর পেছনে দৌড়িয়ে গেলাম। জিজ্ঞেস করলাম, ভাই কি হয়েছে? সানী তখন বের হয়ে যেতে যেতে আমাকে বললেন, ‘আমি জায়েদকে কষে চড় দিয়েছি। এর পর জায়েদ আমাকে মারার জন্য পিস্তল দেখিয়েছে। আমি তাকে বলেছি পিস্তল... ঢুকাব।’ এই কথা বলতে বলতে বের হয়ে গেল ওমর সানী।
এ অভিনেতা আরও বলেন, ‘ঘটনাটি খুব কম সময়ের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। ডিপজল ভাইয়ের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত হয়। ওই সময় ডিপজল ভাই সানী ও জায়েদ দুজনকেই খেয়ে যেতে বললেন। কিন্তু কেউই খায়নি। বের হয়ে গেছে। ঘটনাটি বেশি সময় ধরে হয়নি।’
বক্তব্যের শেষে ঘটনার সময় জায়েদ খানের কাছে যে পিস্তল ছিল তা একরকম স্বীকারই করলেন অভিনেতা যাদু আজাদ।
রাগান্বিত স্বরে উল্টো তিনিই প্রশ্ন করলেন বেশ কয়েকটি, ‘জায়েদ খানকে কেন পিস্তল দেওয়া হয়েছে? সে কি বড় ব্যবসায়ী? সে কি কোনো বিখ্যাত মানুষ? কেন তার কাছে এ ধরনের পিস্তল থাকবে? আমি মনে করি এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তার পিস্তলের লাইসেন্স বাতিল হওয়া উচিত।’
তবে পিস্তল বের করার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করেছেন জায়েদ খান। উল্টো ওমর সানীকে মাতাল বলে অভিযোগ আনেন জায়েদ।
যুগান্তরকে তিনি বলেন, ‘পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়ার কথা একেবারেই বানোয়াট। প্রথম কথা হচ্ছে— যেখানে অনুষ্ঠান হচ্ছিল, সেখানে হলরুমে সিকিউরিটি ইলেকট্রনিক গেটের চেকআপ পেরিয়ে পিস্তল নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ওখানে কোনো ধরনের অস্ত্র নিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ। আর তিনি (ওমর সানী) সেদিন বেশ মাতাল ছিলেন। মদ্যপ অবস্থায় তিনি উপস্থিত হয়ে অযথা চিল্লাচিল্লি করছিলেন। এ কারণে আমি তাকে ঠাণ্ডা স্বরে কথা বলতে বলেছি। এর বেশি কিছু হয়নি। ডিপজল ভাই এসে সব ঠিকঠাকও করে দিয়েছেন। এর পর তিনি চলে যান।