২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৬:০৬:১৬ অপরাহ্ন
ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরিকল্পনা জানত না ইরান: মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়ন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-১০-২০২৩
ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরিকল্পনা জানত না ইরান: মার্কিন গোয়েন্দা মূল্যায়ন

ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের আকস্মিক হামলার পরিকল্পনার বিষয়টি আগে থেকে জানতেন না ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তারা। হামলার খবর জানার পর তাঁরা বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন। গোয়েন্দাদের সংগ্রহ করা তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়টি জানিয়েছে। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন নিউজ একাধিক গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে তথ্য জানিয়েছে। 


গত ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলের দিকে ৫ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। একই সঙ্গে স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েন হামাস যোদ্ধারা। ইসরায়েলও এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ ঘোষণা করে হামাসের বিরুদ্ধে। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ১২ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৫ হাজার ৬০০ জন।


হামলার পরপরই পশ্চিমা বিশ্বের গোয়েন্দারা অনুমান করেছিল, হামাসের এই হামলার বিষয়টি বোধ হয় সংগঠনটির অন্যতম শীর্ষ পৃষ্ঠপোষক ইরান জানে। এমনকি ইসরায়েলও অতীতে একাধিকবার অভিযোগ করেছে, ইরান হামাসকে অস্ত্র, অর্থ ও অন্যান্য কৌশলগত উপকরণ দিয়ে সহায়তা করছে।


কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ গোয়েন্দা মূল্যায়ন বলছে, ইরানিরা এই বিষয়ে অন্ধকারে ছিল। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনেকে বলছেন, এর ফলে আরও একটি বিষয় নিয়ে নতুন করে ভাবার প্রয়োজন রয়েছে যে, ইরান এই হামলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত কিনা। নতুন গোয়েন্দা তথ্য এই হামলায় ইরানের জড়িত থাকার বিষয়ে বিপরীত অবস্থানই ব্যক্ত করে।


সূত্রগুলো জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্য যাই হোক না কেন—যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইরান এই হামলায় সরাসরি জড়িত কিনা এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চান না। তাঁরা এখনো এই হামলায় ইরানের সম্পৃক্ততা রয়েছে—এমন প্রমাণ খোঁজার চেষ্টা করছেন।


যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের ধারণা, হামলার শুরু থেকেই ইরান হামাসকে দীর্ঘমেয়াদি ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সহায়তা দিয়েছে। এসব সহায়তার মধ্যে অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা উল্লেখ্যযোগ্য। মার্কিন কর্মকর্তাদের অনুমান, ইরানের সহায়তার কারণেই হামাস ইসরায়েলে এ ধরনের বড় আকারের হামলার সাহস পেয়েছে।


ওই সূত্রটি আরও জানিয়েছে, শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা যাই মনে করুন না কেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা মনে করছেন, এই হামলার পেছনে ইরান সরাসরি কোনো ভূমিকা পালন করেনি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন বলেছেন, ‘ইরান হয়তো জানত যে, হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু তাঁরা জানত না যে, কবে, কখন এবং কীভাবে হামলা করবে হামাস।’


ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যদিও ইরান হামাসকে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন দিয়ে আসছে কিন্তু বর্তমানে আমাদের কাছে এমন কোনো প্রমাণ নেই যা থেকে উপসংহারে পৌঁছানো যায় যে, এই হামলার পেছনে ইরান হামাসকে সহায়তা দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনই কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়াটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বোকামি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসন্ন দিনগুলোতে যেসব তথ্য আমরা এই বিষয়ে পাব তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’


এর আগে, গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগত যোগাযোগ সমন্বয়ক জন কিরবি বলেছিলেন—যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য নেই যা থেকে প্রমাণ করা যায় যে, ইরান এই হামলার বিষয়ে আগে থেকেই জানত এবং দেশটি এই হামলার পরিকল্পনা, অস্ত্র সহায়তা এবং অভিযান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত।


শেয়ার করুন