রোজার মাসে বিপুল পরিমাণ খেজুর বিক্রি হয়। এসব খেজুর বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে। অনেকে খেজুর সংরক্ষণ করেন। তবে এসব খেজুর সতেজ ও পোকামাড়কমুক্ত রাখতে নানা ধরনের অপদ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগ আছে। বাজারে থাকা খেজুরের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও মাথাব্যথা বা নজর নেই সরকারি সংস্থাগুলোর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে বিক্রি হওয়া খেজুর পোকামাকড়মুক্ত ও সতেজ রাখতে পটাশিয়াম মেটাবাইসালফাইট ও সোডিয়াম সরবেট মেশানো হয়ে থাকে। এতে ক্যানসারসহ জটিল রোগব্যাধি হতে পারে।
জানতে চাইলে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন আজকের পত্রিকাকে বলেন, খেজুরের মানের বিষয়ে জানা নেই। এ বিষয়ে বিএসটিআই বলতে পারবে।
বিএসটিআইয়ের মুখপাত্র উপপরিচালক রিয়াজুল হক বলেন, খেজুর তাঁদের বাধ্যতামূলক পণ্যের আওতাধীন নয়। এ কারণে এগুলো পরীক্ষা করা হয় না। তবে বিএসটিআইয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আগে তাঁরা খেজুরে ফরমালিনের মাত্রা পরীক্ষা করলেও এখন আর করা হয় না।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফুড সেফটি অথরিটির মতে, গ্রহণযোগ্য মাত্রায় সোডিয়াম সরবেট ব্যবহারের অনুমোদন আছে। একজন মানুষের শরীরে সর্বাধিক ২৫ মিলিগ্রাম গ্রহণযোগ্য মাত্রা। অপর দিকে পটাশিয়াম মেটাবাইসালফাইট ব্যবহার নির্ধারিত মাত্রার বেশি হলে শ্বাসকষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পরিচালক সহদেব চন্দ্র সাহা বলেন, খেজুরে অপদ্রব্য মেশানোর বিষয়টি তাঁদের জানা নেই। খেজুরে বিপুল পরিমাণ সোডিয়াম থাকে। তাঁদের টিম নিয়মিত বাজারে অভিযান চালাচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, খেজুরের মান পরীক্ষার কোনো ল্যাব তাঁদের নেই। এ কারণে এগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে না।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির হেলথ অ্যান্ড লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক বেলাল হোসেন বলেন, পুরোনো খেজুরে চিনি-সিরাপ মেশানো হয়ে থাকে। এর সঙ্গে প্রিজারভেটিভ হিসেবে পটাশিয়াম মেটাবাইসালফাইট ও সোডিয়াম সরবেট মেশনো হয়।
পোকামাকড় দমন করতে এবং খেজুর সতেজ রাখতে এই দুটি উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। এ দুটি উপাদান বেশি মাত্রায় ব্যবহার করলে কিডনি বিকল ও ক্যানসার হতে পারে।
তবে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, খেজুরের প্রধান শত্রু পানি। খেজুরে কোনো অপদ্রব্য মেশানোর সুযোগ নেই। তবে দেশে কিছু নতুন ব্যবসায়ী খেজুর আমদানি করছেন। তাঁরা অজ্ঞতার কারণে খেজুরে কিছু মিশিয়েও থাকতে পারেন। যদিও বিষয়টি নিশ্চিত হতে হবে।